শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু গোদাগাড়ীতে মজুত করাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দৌঁড়-ঝাঁপ গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার!
আদালতের নির্দেশে ধরা পড়ল ভূমি অফিসের ভয়াবহ অনিয়ম

আদালতের নির্দেশে ধরা পড়ল ভূমি অফিসের ভয়াবহ অনিয়ম

আদালতের নির্দেশে ধরা পড়ল ভূমি অফিসের ভয়াবহ অনিয়ম
আদালতের নির্দেশে ধরা পড়ল ভূমি অফিসের ভয়াবহ অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার : আদালতে জমি সংক্রান্ত মামলার শেষ নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, জমি খারিজ করার পরও খতিয়ান থেকে ওই জমি কর্তন করা হয় না। পরে একই জমি অন্যকে খারিজ করে দেওয়া হয়। আবার কারও অনুকূলে কম জমি খারিজের পরও পরবর্তীতে ভূমি অফিসের রেজিস্টারে কাটাকাটি করে তার নামে বেশি জমি খারিজ দেখানো হয়। এতে দাগের প্রকৃত পরিমাণের চাইতেও বিভিন্ন জনের নামে বেশি জমি খারিজ হয়ে যায়। আর এ-নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব-কলহ। উৎপত্তি ঘটে মামলা-মোকদ্দমার।

সম্প্রতি এমনই একটি মামলায় রাজশাহীর বাগমারা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নির্দেশে বাগমারা এসি ল্যান্ড অফিসের এরকম অনিয়ম ধরা পড়েছে বিচারকের পরিদর্শনে। বাগমারা থানার নুদাকান্দর মৌজার যে-দুটি দাগ নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় আবুল হোসেন ও মকবুল হোসেন মধ্যে। এনিয়ে উভয়ই মামলা করেন বাগমারা আদালতে। মামলার নথিপত্র যাচাই করতে গিয়ে আদালতের নজরে এসিল্যান্ড অফিসের গাফিলতি ধরা পড়ে।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) এব্যাপারে আদালত এক আদেশে এসিল্যান্ড অফিসকে সতর্ক হওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

এবিষয়ে বাদী আবুল হোসেনের আইনজীবী ও আদালতের এজিপি মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘যেহেতু এটি বাদী বিবাদীর কোন বিষয় নয়, সেহেতু আমি এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নই। আদালত মামলাটি খতিয়ে দেখতে গিয়ে নথিপত্র যাচাই করে যেখানে সমস্যা মনে হয়েছে সেখানে আদেশ দিয়েছে। আর তাই আমি এব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। বলতে গেলে আমার মক্কেলসহ এসি ল্যান্ড, এসি ল্যান্ড অফিস সব চলে আসবে। সুতরাং আমি কিছুই বলতে চাই না।’

তবে আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ অক্টোবর রাজশাহীর বাগমারা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক মারুফ আল্লাম ৯৭/১৪ অপ্র. মামলার একটি নথি পর্যালোচনা করে অনিয়ম দেখতে পান। সেখানে রাজশাহীর বাগমারা থানার নুদাকান্দর মৌজার যে-দুটি দাগ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ওই দুটি দাগে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রকৃত জমির চাইতে বেশি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। দেখা যায়, দাগের প্রকৃত জমির চাইতে ৪৬২ দাগে ১.৫ শতক আর ৪৬৩ দাগে ২.৫ শতক জমি অতিরিক্ত খারিজ হয়েছে। মোকদ্দমা উদ্ভবের পেছনে এই অতিরিক্ত খারিজের ভূমিকা আছে বলে আদালত তার পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেন। বাদী-বিবাদীর স্বত্বদখল নিরূপণে উক্ত খারিজসমূহ সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রয়োজন উল্লেখ করে আদালত সেদিন এসি ল্যান্ডের কাছ থেকে ব্যাখ্যা তলব করেন। একইসঙ্গে খারিজসংশ্লিষ্ট রেজিস্টারগুলোও পরিদর্শনের জন্য আদালতে তলব করা হয়।

জানতে চাইলে আদেশের বিষয়টি বাগমারা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মমিন প্রামাণিক প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে বাগমারার এসি ল্যান্ড মাহমুদুল হাসান লিখিত ব্যাখ্যা ও সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারগুলো আদালতে প্রেরণ করেন। রেজিস্টারগুলো পরিদর্শনে আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. আলমগীর হোসেন দেখতে পান, ৪৬৩ দাগের সম্পূর্ণ ৪ শতক জমি প্রথমে বিবাদীর নামে খারিজ করা হলেও খতিয়ান থেকে তখন তা কর্তন করা হয়নি। ফলে একই সম্পত্তি থেকে পরে আবারও ২.৫ শতক সম্পত্তি বাদীকে খারিজ করে দেয়া হয়। আবার ৪৬২ দাগের ৫ শতকের মধ্যে প্রথমে বিবাদীকে ২ শতক আর পরে অবশিষ্ট ৩ শতক বাদীকে খারিজ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এসি ল্যান্ড অফিসের রেজিস্টার অনুসারে বাদীর খারিজ ৩ শতক হলেও তহশিল অফিসের রেজিস্টারে দেখা যায়, কাটাকাটি করে সেটিকে ৪.৫ শতক করা হয়েছে।’

মমিন বলেন, ‘মূলত: রেজিস্টার পরিদর্শনের পর বিচারকের কাছে এসব অনিয়মের ধরা পড়ে।’

বাগমারায় জমি নিয়ে অনিয়মের প্রেক্ষিতে বিচারক তার আদেশে বলেন, ‘খারিজ-খাজনার কাগজকে দখলের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আর স্বত্বের সমর্থক প্রমাণ হিসেবে দেখা হয়। সুতরাং খারিজ খাজনার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও তদারকি প্রয়োজন। নয়তো আদালতের কাঁধে অপ্রয়োজনীয় মামলা মোকদ্দমার চাপ বাড়তেই থাকবে। এসব অনিয়ম ও জালিয়াতির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশের কপি ডেপুটি কমিশনার, রাজশাহী ও এসি ল্যান্ড, বাগমারা বরাবর প্রেরণ করার আদেশ দেন আদালত।’

তবে এবিষয়ে বাগমারা এসি ল্যান্ড মাহমুদুল হাসান, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। বিজ্ঞ আদালতের এমন কোন নির্দেশনা যদি আমার প্রতি থেকে থাকে তবে অবশ্যই সেটির প্রতিপালন করা হবে।’

এদিকে, রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আদালতের এমন কোন নির্দেশনা আমি হাতে পায়নি। আদালত থেকে প্রেরেতি আদেশের ধরন না দেখে এখন কোনো মন্তব্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply